​বিমান যাত্রায় যে শিষ্টাচার জরুরি

প্রথম বিমান ভ্রমণের গল্প অনেকেরই স্মৃতিতে জীবন্ত থাকে চিরকাল। কম সময়, আরাম এবং ঝামেলা কমানোর জন্য অনেকেই বিদেশে বিমানে যেতে পছন্দ করেন। বিমান যাত্রা বেশিরভাগ সময়ই রোমাঞ্চকর। বিমানে চড়া আজকাল খুব বড় বিষয় নয়। তবে বিমান যাত্রায় কিছু শিষ্টাচার আপনাকে একজন ভালো যাত্রী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে।

বিমান ভ্রমণের কিছু শিষ্টাচার

১। বিমানে উঠতে তাড়াহুড়া নয়
একটি বিমানে একসঙ্গে কয়েকশত যাত্রী আরোহন করেন। যাত্রীদের ঠিকভাবে তুলতে বিমান সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন গ্রুপে যাত্রীদের ভাগ করে ফেলেন। এরপর সেই নম্বর অনুযায়ী যাত্রীদের বিমানে উঠতে বলা হয়। সমস্যা হয়, যখন যাত্রীরা নাম্বারের তোয়াক্কা না করে অনেকে বিমানে উঠতে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এটা খুবই বিরক্তির ব্যাপার। অনেক সময় শুধুমাত্র এ জন্য বিমান ছাড়তে দেরি হয়।

২। বিমানে উঠার আগে শেষ টান
বিমানের মধ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ। তাই অনেক যাত্রী বিমানে উঠার আগ মুহূর্তে সিগারেটে দু-একটা টান দিয়ে নেন। সমস্যা হচ্ছে, বিমানের ভেতরটা আবদ্ধ। তাই সেখানে আপনার সিগারেটের গন্ধ অন্য যাত্রীদের বিরক্ত করতে পারে। তাই বিমানে উঠার আগে ধূমপান পরিহার করুন।

৩। ভ্রমণ করছেন, কিন্তু নড়ছেন না
বড় বিমানবন্দরগুলোতে বিশেষ ধরনের মুভিং ওয়ার্কওয়ে’ থাকে। এটা অনবরত সামনের দিকে যেতে থাকে। ফলে কেউ সেখানে দাঁড়ালে এমনিতেই গন্তব্যে যেতে পারবেন। তাই অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। এটা আসলে ঠিক নয়। মুর্ভিং ওয়েতে আপনি হাটলে অন্য যাত্রীদের সমস্যা হয়।

৪। হাতল দখলের লড়াই
বিমানের সিটগুলোতে খুব বেশি জায়গা থাকে না। একটি সিটের সঙ্গে অন্য সিট লাগানো থাকে এবং হাতল থাকে একটা। কেউ কেউ কুনই দিয়ে গুতা দিয়ে বা হাত শক্ত করে সেই হাতল দখলের চেষ্টায় মেতে উঠে। এমনটা করা কোনাভাবে কাম্য নয়।

৫। হ্যালো রানওয়েতে আছি
বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে ফোন করতে শুরু করেন। এমনটি নেটওয়ার্ক না পাওয়া গেলে চলে নিরন্তন চিৎকার, হ্যালো এইমাত্র ল্যান্ড করলাম, শুনতে পাচ্ছো। আসলে এভাবে তাড়াহুড়া করা ভালো নয়। বিমানবন্দরে অপেক্ষারত বিভিন্ন ডিসপ্লে ঘোষণার মাধ্যমে এমনিতেই বিমান অবতরণের খবর শুনতে পারেন। সেটা প্রিয়জনকে চিৎকার চেঁচামেচি করে জানানোর প্রয়োজন নেই।

৬। সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি নয়
বিমানের সিটগুলো হয় হালকা ধরনের। মূলত তেল খরচ বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা। তাই এসব সিটের পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিলে সেটি বিমান আরোহীকে আঘাত করতে পারে। সুতরাং কোন অবস্থায় সামনের সিটে ধাক্কা বা লাথি দিবেন না।

৭। পেছনের লোকের আগে নামার লড়াই
বিমান ল্যান্ড করার পর দারজা খোলার আগেই অনেকে নামার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করেন। পারলে সামনের যাত্রীকে ডিঙিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন অনেকে। এটা খুবই অশোভনীয়। বিমান যখন অবতরণ করছে, তখন সব যাত্রীকেই নামাবে। তাই নিশ্চিন্তে বসে অপেক্ষা করুন।

৮। খালি পায়ে ঘুরবেন না
অনেকেই বিমানে উঠে জুতা-মোজা খুলে ফেলেন। এটা অনেকের জন্যই বিরক্তির কারণ। আর খালি পায়ে বিমানের টয়লেট ব্যবহার করলে রোগ-জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। সুতরাং পুরো পথ জুতা পরে থাকুন।

৯। শব্দ বান্ধ না করেই গেম খেলা
আজকাল স্মার্টফোন, ট্যাবলেটে সহজেই গেমস খেলা যায়। এতে দোষের কিছু নাই। কিন্তু বিমানে বসে উচ্চ শব্দে গেমস খেললে কারো জন্য এটি বিরক্তির কারণ হতে পারে। তাই সাইলেন্ট মুডে গেমস খেলা ভদ্র ব্যাপার।

১০। লাগেজ নেওয়ার তাড়া
বিশ্বের সব বিমানবন্দরেই লাগেজ নেয়ার বিশেষ জায়গা আছে। সেখানে বোল্টের উপরে লাগেজগুলো একের পর এক দেয়া হয়। সেই বেল্ট অনবরত ঘুরতে থাকে। অনেক সময় বিমান থেকে নেমেই সেই বেল্ট ঘিরে বড় ধরনের জটলা তৈরি করে। এটা অনেক সময় সমস্যা তৈরি করে।