মতিঝিলে দক্ষিণ সিটির উচ্ছেদ অভিযান (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক : পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান ও পল্টনের আশপাশের এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

সোমবার দুপুরে ফুটপাতের দোকান ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সিটি করপোরেশনের বেশ কয়েকটি বুলডোজার অংশ নেয়। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মো. নাজমুস শোয়েব। আজ ছিল উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিন।

উচ্ছেদ অভিযান এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, মতিঝিলের এফবিসিসিআই ভবনের বিপরীত পাশে সিটি করপোরেশনের দুটি বুলজোর হকারদের রেখে যাওয়া চৌকিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ও ছাউনি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় অনেক হকার তাদের আসবাবপত্র রক্ষা করতে এগিয়ে এলেও অনেকেই তা শেষরক্ষা করতে পারেননি। অনেকে চৌকি ও অন্যান্য আসবাবপত্র আশপাশের বিভিন্ন ভবনের বাউন্ডারির ভেতরে নিয়ে রক্ষা করেন। অভিযান চলাকালে পার্কিং করা একটি সাইকেলও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। তবে উপস্থিত কাউকে ওই সাইকেল নিজের দাবি করতে দেখা যায়নি। স্থানীয়দের দাবি ওই সাইকেলটি কোনো হকারের।

উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মো. নাজমুস শোয়েব বলেন, ‘নির্দেশনা উপেক্ষা করে গুলিস্তান এলাকার ফুটপাতে যেসব হকার দোকান নিয়ে বসেছিলেন তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

অন্যদেকি গুলিস্তান ঘুরে দেখা যায়, সোমবার সকালে হকাররা ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসেন। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে তাদের ফুটপাতে থাকা জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে বলা হলেও নির্দেশ উপেক্ষা করে অনেক হকার দোকান খুলে রাখেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ডিএসসিসি উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এ সময় হকাররা সরে গেলে তাদের রেখে যাওয়া চৌকি, বাক্স, টিনের ছাউনি ও বিভিন্ন আসবাবপত্র বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।

গুলিস্তানে উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন হকাররা। তারা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবি জানান।

গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া ফুটপাতের ব্যবসায়ী মিন্টু রায় বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আমরা এ জায়গায় ব্যবসা করছি। আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন কী করে খাব? কীভাবে চলবে আমাদের পরিবার?’

তিনি জানান, অফিস টাইম ছাড়া কেউ কোনো কিছু কিনে না। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর মানুষ কোনো কিছু কিনতে ফুটপাতে আসবে না। অন্য কোনো জায়গায় ব্যবস্থা না করা হলে তারা কোনোদিনই এ জায়গা ছাড়বেন না।

হকারদের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি নগর ভবনের সভাকক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও হকার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ১৫ জানুয়ারি থেকে কর্মদিবসে গুলিস্তান, মতিঝিল ও এর আশপাশ এলাকার ফুটপাতে দিনের বেলা কোনো হকার বসতে পারবে না। তবে অফিস টাইমের পর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে তারা গুলিস্তান-মতিঝিল এলাকায় বসতে পারবে।