ইউপি নির্বাচন নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি’র তৃণমুলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

মোঃ জয়নাল আবেদীন রুহিয়া থানা প্রতিনিধি ঃ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার ঘোষনায় ঠাকুরগাঁয়ের তৃণমূলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জেলার পাঁচটি উপজেলার ২০ ইউনিয়নে, বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী সহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন পূর্বাভাস পাওয়া।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের আল মামুন নামের বিএনপি’র কর্মী বলেন এই সরকারের আমলে দলের কাজ করতে গেলে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
তাই একমাত্র নির্বাচনের সময় মানুষের কাছে গিয়ে সরকারের অপকর্ম গুলো তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া যায়। গত পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বেশ কিছুদিন ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কথা বলতে পেরেছি। ইউপি নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের মানুষেরমধ্যে সরকার বিরোধী জনমত গড়ে তোলার সুযোগ ছিল, কিন্তু নির্বাচন বর্জন করায় আমরা সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম।
একই উপজেলার রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে দীর্ঘদিন মাঠ সাজিয়ে আসছেন জেলা বিএনপি’র যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আনসারুল হক। গত ১৪ জানুয়ারি তাকে দলের প্রার্থী নির্বাচন করে তার হাতে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেন রুহিয়া থানা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। এখন ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। এ বিষয়ে আনসারুল হক বলেন দীর্ঘদিন রাজনীতি করে  আসছিলাম এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল আমার নির্বাচনী মাঠে।তাদের অনুরোধ এই এবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছি।এখন নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার অবকাশ নেই স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে দলের কাছে আমি অনুমতি চাইব।দল থেকে অনুমতি না দিলে প্রয়োজনে দল থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বিএনপির দলীয় চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন , নির্বাচনে অংশ নিলে মাঠের নেতাকর্মীরা সক্রিয় থাকেন এবং সজাগ থাকেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে চাঙ্গা করার জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচন করলে বাধা হওয়া উচিত নয়। মামলা-হামলার ভয় নিয়ে তো সবসময় থাকা যাবে না ভয় কাটাতে হবে।তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার একেবারেই বিপক্ষে সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি’র যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পয়গাম আলী। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান থাকায় আমি নারগুন ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলেছি।এখন কোনো নির্বাচনে সুষ্ঠু হচ্ছে না গত নির্বাচনে ইউনিয়ন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তুএবার তারা ছেড়ে দেবে না বলে আশঙ্কা করছে।
সেটা করতে গিয়ে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন দল কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালাবে।সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে কর্মীদের হয়রানি করবে এমন হামলা মামলা ও হয়রানি থেকে দলের নেতাকর্মীদের দূরে রাখতে দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করে নির্বাচনে অংশ নেব না।সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বিএনপির দলীয় বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হাসান মোঃ আব্দুল হান্নান, বড় কাউ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাত কুমার সিংহ পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারানীগঞ্জের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, দলের সিদ্ধান্ত মেনে তারা নির্বাচনে অংশ নিবেন না।জেলা বিএনপি’র সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন ক্ষমতাসীন দলের হামলা মামলা ও হয়রানি মোকাবেলা করে, ইউপি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মতো অনেক নেতা-কর্মী দলে আছেন।কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে স্বতন্ত্রভাবে কেউ নির্বাচন করতে পারবেন কিনা সে ব্যাপারে এখনো কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা পাননি বলে তিনি জানিয়েছেন।
৩ মার্চ প্রথম ধাপে 371 ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের তফসিল ঘোষনা করেনি নির্বাচন কমিশন সচিব, মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার১৮ই  মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ভোট হবে আগামী ১১ ই এপ্রিল । চেয়ারম্যান পদে দলীয় আর সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। তবে এই ধাপে ঠাকুরগাঁওয়ের কোন ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে না।এর আগে গত 28 ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।পরে বিএনপি’র পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আসন্ন ইউনিয়ন ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।